হবিগঞ্জের বাহুবলে মোটরসাইইকেলের ব্যাটারি ক্রয়কে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির পর মাইকে ঘোষণা দিয়ে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে বানিয়াগাঁও ও চারগাঁও গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী ও পু্লিশের যৌথ টিম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ওসি জাহিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজন পু্লিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার মানিকগঞ্জের আজিমনগর ইউনিয়নের বসন্তপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আগুন নেভাতে গেলে ওয়ার্ড বিএনপি নেতাসহ কয়েকজনকে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে। আহতরা অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ও তার ভাই আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়। প্রতিবেশীসহ বিএনপির কয়েকজন আগুন নেভাতে গেলে দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, কুড়াল দিয়ে কোপ দেয় ও মারধর করে। আহত নুর হাফেজ বলেন, চেয়ারম্যানের বাড়ির আগুন না নেভালে আমাদের বাড়িও পুড়ত। আব্দুর রহমান বলেন, ঈদের দিন আমার বাড়িতে সংগঠনের উপজেলা সভাপতিসহ অনেকে আসে। আমরা খাওয়া দাওয়া করি। সোমবার রাতেই আমাকে হুমকি দেয় কয়েকজন। আজ তাদের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ভোলায় বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন হাওলাদারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কুঞ্জপট্টি গ্রামের ৫ শতাংশ জমি নিয়ে সংঘর্ষ ঠেকাতে গেলে বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতি জামাল উদ্দিন হাওলাদারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। জানা গেছে, কুঞ্জপট্টি মৌজায় মো. ইব্রাহীম রাঢ়ি নামের এক ব্যক্তি ৫ শতাংশ জমি কেনেন। কেনার পরে পাশের জমির মালিক মো. আলম বেপারী ওই জমি দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছে গত কয়েক বছর ধরে। এ বিরোধের জের ধরে কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে। ঈদের দিনেও উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও উত্তেজনা হয়। মারামারি ঠেকাতে গিয়ে খুন হন নিহত ব্যক্তি।
হবিগঞ্জের কালিকাপুরে মাজারে ওরস পালনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকাবাসী জানান, ওরস নিয়ন্ত্রণ করতেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার পতন ঘটলে তা স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করে। এক পক্ষে নেতৃত্ব দেন যুবদল নেতা নজরুল গাজী অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন বাঘাসুরা ইউপি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সজল। এ নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ৩০ জন আহত হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে আর পুনর্বাসন করতে দেওয়া হবে না। যে আওয়ামী লীগ আমাদের ও বাংলদেশকে শোষণ করেছে, চাঁদাবাজি করেছে সেই আওয়ামী লীগের আর এ দেশে ঠাঁই নেই। আমরা ১৭ বছর কষ্ট করেছি তাই এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। এখন আমরা এক পরিবার হয়ে থাকতে চাই। আগামী নির্বাচনের জন্য ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে। এই জাতীয় সরকারের মাধ্যমে সারাদেশে উন্নয়ন করতে চাই।
আমরা বিএনপির পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা ছাড়া আমরা সবসময়ই পরাধীন থাকতাম। আমরা কখনও স্বাধীনতার মুখ দেখতাম না। তার স্বাধীনতার ঘোষণা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের এবং পালিয়ে যাওয়া জনসাধারণ ও পুরো দেশবাসীকে মনোবল জাগিয়েছিল। বগুড়া গাবতলি উপজেলার পদ্মপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
৫০ দিনের নয়, দখলদার ইসরাইল গাজায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাবে ১১ জন জীবিত ইসরাইলি বন্দিকে মুক্ত করার পাশাপাশি ১৬টি মরদেহও ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছে। বিপরীতে ইসরাইলের কারাগার থেকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি দেওয়া হবে। এই প্রস্তাবে আরো রয়েছে যুদ্ধবিরতির ৫ম দিনে হামাসের কাছে বাকি বন্দিদের তথ্য চাওয়া; ১০ম দিনে ১৬ জনের মরদেহ হস্তান্তর করার অনুরোধ। নেতানিয়াহুর সরকার মনে করে যে, গাজায় হামাসের হাতে এখনো ৫৯ জন ইসরাইলি বন্দি রয়েছে। যাদের মধ্যে অন্তত ২৪ জন জীবিত। অন্যদিকে, ইসরাইলি কারাগারে ৯,৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে বাড়ি ভাঙার মামলায় মঙ্গলবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বুলডোজার নীতিকে অসাংবিধানিক এবং অমানবিক বলে তীব্র নিন্দা করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়াগরাজে একটি প্লটে চার-পাঁচজনের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন একজন আইনজীবী এবং অধ্যাপকও। অভিযোগ যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন না করেই তাদের বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। আইনজীবী জানান, তার মক্কেলদের বাড়ি যে জমিতে ছিল, প্রশাসন তা ভুল করে নিহত কথিত গ্যাংস্টার আতিক আহমেদের বলে চিহ্নিত করেছিল। তারপরই ওই বাড়িগুলি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এমনকি, বাড়ি ভাঙার কথা তার মক্কেলদের জানানো হয় মাত্র একদিন আগে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ সপ্তাহেই হাঙ্গেরি সফর করতে যাচ্ছেন। এই সুযোগে গাজায় চালানো যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেফতারের জন্য হাঙ্গেরির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এর আগে গত নভেম্বরে ICC গাজার পরিস্থিতির জন্য নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সেই সময় হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানান এবং তিনি বলেন, হাঙ্গেরি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দেওয়া আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করবে না। মঙ্গলবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষণা ও নীতির প্রধান এরিকা গেভারা-রোসাস নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করার আহ্বান জানান।
মিয়ানমারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। সহায়তার মধ্যে রয়েছে এক টন হাইজিন কিট, ৮ টন শুকনা খাবার, দুই দশমিক ৫ টন পানি, চার টন ওষুধ, এক টন হাইজিন পণ্য ও দেড় টন ত্রাণ তাঁবু। মঙ্গলবার সংস্থাটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলাম (অব.) কুর্মিটোলা বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান এভিএম জাভেদ তানভীরের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০ প্যাকেট হাইজিন কিট হস্তান্তর করেন।
লক্ষ্মীপুরে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে মো. রাজু (৩৫) নামে এক শ্রমিকদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৩৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কবির হোসেন, ইব্রাহিম খলিল, লিটন হোসেন ও রেখা বেগম। এজাহারে উল্লেখিত অন্য ৫ জনের নাম জানায়নি পুলিশ। স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চররুহিতা ইউনিয়নের সবুজের গোঁজা এলাকায় কাজল কোম্পানির ইটভাটার সামনে রাজু গণপিটুনির শিকার হয়। স্থানীয় কবিরের বাড়িতে ঢুকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে মারা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশকেই ভেঙে নিজেদের জন্য সমুদ্রপথ তৈরি করার হুমকি দিলেন ত্রিপুরার নেতা তিপ্রা মথা দলের প্রধান প্রদ্যোত মানিক্য। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা ড. ইউনূসের মন্তব্যকে আপত্তিকর বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা একে উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন। এর আগে চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টা সেভেন সিস্টার্সকে একেবারে ভূমিবেষ্টিত বলে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের সমুদ্রের অভিভাবক বলেছিলেন। একে এক বিশাল সম্ভাবনা উল্লেখ করে চীনের অর্থনীতির সম্প্রসারণের সুযোগ এনে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি চীন সফরে বলেছিলেন, ‘সেভেন সিস্টার্স সম্পূর্ণরূপে ল্যান্ডলকড অঞ্চল। সমুদ্রের কাছে পৌঁছানোর কোনো উপায় নেই তাদের। এই অঞ্চলের জন্য আমরাই সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক। তিনি এটিকে বাণিজ্যের জন্য বিশাল সম্ভাবনা বলে চীনকে বাণিজ্যিক প্রসারে আহ্বান জানান। এই বক্তব্যের পর ভারতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যাল এক্সে লিখেছেন, ‘ভারতের সাতটি রাজ্য ল্যান্ডলকড হওয়ার তাৎপর্য আসলে কী? বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান সর্বদাই ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ ছিল।’ ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি প্রধান উপদেষ্টার এই মন্তব্যকে ‘অবাক করা’ বলে অভিহিত করে নিন্দা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘উত্তর–পূর্বাঞ্চল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই ড. ইউনূসের এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার কোনো অধিকার নেই।’
সোমবার ভোক্তা অধিকারের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডলের নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ফেসবুক পেজ খোলায় থানায় জিডি করেছেন তিনি। এক পোস্টে তিনি ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলোর স্ক্রিনশট যুক্ত করে দেন এবং সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার নাম ব্যবহার করে একটি চক্র একাধিক আইডি খুলে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিচ্ছে। এতে আমাকে বিভিন্ন সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে যেন না হয়, সেজন্য থানায় জিডি করেছি।’
গুম ও খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের এক লাখের বেশি নেতাকর্মী দিল্লি থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বিগত সরকারের সময় গুম-খুন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হয়েছিল। এগুলো করার জন্য বিশেষ টিম ছিল। পুলিশ-র্যাবসহ সবাইকে গুমের আদেশ দেওয়া ছিল। তিনি বলেন, গোটা দেশেই আয়নাঘরের অস্তিত্ব ছিল। অসংখ্য মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। বিরোধী মতের অনেক মানুষকে গুম করে ভারতের জেলে পাচার করা হতো। গুমের সঠিক কোনো হিসাব নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় তালিকা করা হচ্ছে। বিএনপি-জামাতসহ ভিন্ন মতাদর্শের সবাই শেখ হাসিনার ভিকটিম ছিল। আওয়ামী লীগ দল ছিল না, তারা ছিল মাফিয়া। তাদেরকে কোনোদিন রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে দেব না।
আরো ফিড দেখতে লগইন করুন।