কেন্দ্রীয় সরকারের ভোটার তালিকা “স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন” (এসআইআর) কার্যক্রমের পর পশ্চিমবঙ্গজুড়ে নাগরিকত্ব নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অবৈধ নাগরিক ঘোষণার ভয় সামলাতে না পেরে বীরভূম জেলার ইলামবাজারে ৯৫ বছর বয়সী ক্ষিতিশ মজুমদার আত্মহত্যা করেছেন। বাংলাদেশের বরিশালের বাসিন্দা এই বৃদ্ধ কয়েক দশক আগে ভারতে এসেছিলেন এবং নাগরিকত্ব হারানোর ভয়ে চাপগ্রস্ত ছিলেন, বিশেষত ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তার নাম না থাকায়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া বা ডিটেনশন ক্যাম্পে যাওয়ার ভয়ে অতিশয় চিন্তায় ছিলেন।
গত ৭২ ঘণ্টায় দিনহাটা এবং পানিহাটিতে আরও দুটি আত্মহত্যা ঘটেছে, যা বৃদ্ধ এবং প্রবীণ নাগরিকদের ওপর মানসিক প্রভাবের সংকেত দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে দায়ী করেছেন, এটিকে “ভয়, বিভাজন ও ঘৃণার রাজনীতির করুণ পরিণতি” আখ্যায়িত করে নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এসআইআর এবং ভোটার তালিকা সংশোধন কার্যক্রম আসলে একটি রাজ্যভিত্তিক এনআরসি প্রক্রিয়া, যা বিশেষ করে আধুনিক পরিচয়পত্রহীন প্রবীণদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। এই ঘটনাগুলো রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ সৃষ্টি করেছে এবং নাগরিকরা তাদের আইনি ও সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তর মানবিক ও রাজনৈতিক সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে সাধারণ মানুষ নাগরিকত্ব ও পরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে রয়েছেন।