যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ানমার নীতি পরিবর্তনের আভাস : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা আরো ক্ষীণ হয়ে আসছে
মিয়ানমার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তনের আভাস মিলছে, যার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ‘রেয়ার আর্থ মিনারেল’ বা বিরল খনিজ ঘিরে নতুন ভূরাজনৈতিক কৌশল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এমন কিছু প্রস্তাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিয়ানমার নীতিকে পাল্টে সামরিক জান্তার সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের পথ খুলে দিতে পারে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র মূলত মিয়ানমারের বিরল খনিজ সম্পদকে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ থেকে বের করে নিজস্ব সরবরাহ শৃঙ্খলে যুক্ত করার চেষ্টা করছে। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মূল ভিত্তি ছিল আন্তর্জাতিক চাপ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যদি মিয়ানমারকে তাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থের অংশ করে নিতে চায়, তাহলে সে চাপ অস্তিত্বহীন হয়ে পড়তে পারে। এতে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা কার্যত শূন্যের কোটায় নেমে আসতে পারে বলে শঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। চলমান পরিস্থিতিতে এটা প্রায় নিশ্চিত যে রোহিঙ্গা ইস্যু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে আর অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্ধারিত মানবিক সহায়তায় আর্থিক ঘাটতি, জীবন রক্ষাকারী পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে নতুন করে দেড় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর আগমন সংকট আরো গভীর করেছে। এ পরিস্থিতিতে মিয়ানমার জান্তার প্রতি মার্কিন নীতি নমনীয় হলে আন্তর্জাতিক মহলে তাদের বৈধতা প্রশ্নে যে নৈতিক অবস্থান বজায় ছিল, তা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়বে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জান্তা সরকারের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক চাপ হ্রাস পেলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা শুধু ক্ষীণই নয়, প্রায় অবাস্তব হয়ে উঠতে পারে।