শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিহত শিক্ষক, চিকিৎসক, লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা স্বাধীনতা ও ন্যায়ের পক্ষে কলম ধরেছিলেন, আর তাদের হত্যাকাণ্ড ছিল জাতির মেধাশক্তি ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্র। তারেক রহমান বলেন, অর্ধশতাব্দি পেরিয়ে গেলেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি, কারণ গণতন্ত্র বারবার বিপর্যস্ত হয়েছে। তিনি আইনের শাসন, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও বহুমাত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। তিনি দেশের নাগরিকদের একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তোলাই তাদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা। তিনি শহীদ পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে আহত ওসমান হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দেওয়া ওই স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, অসংখ্য মানুষের দোয়ায় ইনশাআল্লাহ সিংহহৃদয় হাদি ফিরে আসবে। তার এই বার্তা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আসিফ নজরুল হাদির সহকর্মীদের মুখে শোনা কিছু মানবিক ঘটনার উল্লেখ করেন। সহকর্মীরা জানান, হাদি প্রায়ই খালি কার্পেটে সহকর্মীদের সঙ্গে ঘুমাতেন, নিজের বালিশ অন্যের মাথার নিচে দিতেন, এমনকি সহকর্মীদের কাপড় নিজে ধুয়ে দিতেন। নজরুল বলেন, যমুনায় সহকর্মীদের অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে এসব শুনে সবাই গভীরভাবে ব্যথিত হয়েছেন, বিশেষ করে হাদির বোনের আর্তনাদ সবাইকে নাড়া দিয়েছে। হাদির ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের ধরিয়ে দিতে কর্তৃপক্ষ ৫০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। ঘটনাটি দেশজুড়ে সহানুভূতি ও ন্যায়বিচারের দাবি জাগিয়েছে।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ অভিযোগ করেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গেলে আবারও বাংলাদেশকে দিল্লির কাছে ‘বিক্রি’ করার চেষ্টা করবে। ১৩ ডিসেম্বর ঢাকার শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি বলেন, এই ধরনের রাজনীতি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদাকে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ফুয়াদ অভিযোগ করেন, ক্ষমতার লোভে নৈতিকভাবে দুর্বল ও সুযোগসন্ধানী ব্যক্তিরা বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে উঠে এসেছে। তারা জাতির শত্রু চেনে না, স্বাধীনতার ইতিহাস বোঝে না এবং জাতীয় স্বার্থের মূল্য উপলব্ধি করে না। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবি পার্টির এই বক্তব্য আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে জাতীয়তাবাদী বক্তব্যকে আরও জোরদার করছে। এতে বিদেশি প্রভাব ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বৈধতা নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ফ্যাসিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্যই দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হতে পারে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক শক্তিই জাতীয় সংকট মোকাবিলার একমাত্র পথ। তিনি উল্লেখ করেন, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক জোটগুলোর মধ্যে ঐক্য বজায় থাকলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। ইনকিলাব মঞ্চের ফ্যাসিবাদবিরোধী ও সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপি এসব সমাবেশে অংশ নেবে। প্রার্থীদের ওপর সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে কাজ করলে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। জনগণের সচেতন অংশগ্রহণকেও তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি ঢাকার বিজয়নগরে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এখনো সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই সময়ে চিকিৎসার প্রতি শরীরের প্রতিক্রিয়া তার সুস্থতার সম্ভাবনা নির্ধারণ করবে। গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রতিদিন সকালে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে এবং পরিবারকে জানানো হয়েছে যে তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন। শুক্রবার দুপুরে বিজয়নগরে রিকশায় চলন্ত অবস্থায় মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ারে স্থানান্তর করা হয়। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান তার অবস্থা নিশ্চিত করে সকলের কাছে দোয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ঘটনাটি রাজধানীতে রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষে অন্তত ২৩ জন নিহত এবং প্রায় সাত লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুই দেশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। কম্বোডিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২ লাখ ৭৪ হাজারের বেশি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, আর থাইল্যান্ডের সাতটি সীমান্ত প্রদেশ থেকে ৪ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে। কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ জন বেসামরিক নাগরিক ও একজন সেনা নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৭৬ জন। থাইল্যান্ডে নয়জন সেনা ও তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১৯০ জন আহত হয়েছেন। এই সংঘর্ষ এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন গত অক্টোবরে কুয়ালালামপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের উপস্থিতিতে দুই দেশ শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধে বাণিজ্য ও পারাপার বন্ধ হয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সংলাপ পুনরায় শুরু না হলে মানবিক সংকট আরও গভীর হতে পারে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। শনিবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ ঘোষণা দেন। তিনি জানান, আসামি ধরার প্রক্রিয়া চলছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুনভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিএমপি কমিশনারের তথ্য অনুযায়ী, হামলায় জড়িত একজনকে ইতোমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি জনগণের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, সবার সহায়তায় অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির অনুষ্ঠানে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন। হাজার হাজার দর্শক প্রিয় ফুটবল তারকাকে এক ঝলক দেখার আশায় ভিড় জমালেও, আয়োজনে অব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মুখ্যমন্ত্রী এক্সে দেওয়া বার্তায় বলেন, তিনি ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত এবং মেসি ও সব ক্রীড়াপ্রেমীর কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছেন। মমতা জানান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়ের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে রাজ্যের মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব থাকবেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষুব্ধ দর্শকরা ব্যারিকেড ভাঙছেন ও মাঠে বোতল-চেয়ার ছুঁড়ছেন। অনেক দর্শক অভিযোগ করেন, উচ্চমূল্যের টিকিট কিনেও তারা মেসিকে ঠিকভাবে দেখতে পাননি। ঘটনাটি আয়োজকদের দায়িত্বহীনতা ও ভিআইপি সংস্কৃতির সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, যা ভবিষ্যতের বড় ক্রীড়া ইভেন্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশ্ন তুলেছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি জানান, খুব শিগগিরই ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হবে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর রাজারবাগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে তিনি এই তথ্য দেন। ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তের সন্ধানদাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং তাকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট সড়কে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এবং তার অবস্থা সংকটাপন্ন। ঘটনার কারণ এখনও নিশ্চিত নয়, তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, যিনি গুলি চালান তিনি সকাল থেকেই হাদির নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন।
ওমান উপসাগরে প্রায় ৬০ লাখ লিটার চোরাই ডিজেলবাহী একটি ট্যাংকার জাহাজ জব্দ করেছে ইরানের কোস্টগার্ড বাহিনী। জাহাজটির নেভিগেশন সিস্টেম বিকল হয়ে যাওয়ায় এটি ভাসমান অবস্থায় ছিল বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ। জাহাজে থাকা ১৮ জন নাবিককে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার নাগরিক রয়েছেন। ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হরমোজগান প্রদেশের উপকূলে এই অভিযান চালানো হয়। তবে জাহাজটি কোন দেশের, তা প্রকাশ করা হয়নি। গত মাসেও পারস্য উপসাগর থেকে অনুরূপ একটি জাহাজ জব্দ করেছিল ইরানের কোস্টগার্ড। ঘটনাটি এমন সময় ঘটল যখন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে একটি ইরান-ভেনেজুয়েলা সংযোগযুক্ত ট্যাংকার জব্দ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাগুলো ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামুদ্রিক উত্তেজনা এবং পারস্পরিক প্রতিক্রিয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কলকাতার সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসিকে ঘিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রোববার ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। প্রায় এক লাখ দর্শক উপস্থিত থাকলেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয় পুলিশ ও আয়োজকরা। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা মেসির আশেপাশে ভিড় করলে দর্শকদের ক্ষোভ আরও বাড়ে। মেসিকে দেখতে না পেয়ে অনেকেই বোতল ছোড়া, ব্যানার ছেঁড়া ও হোর্ডিং ভাঙার মতো সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। প্রায় আড়াই হাজার দর্শক ফেন্সিং ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন এবং কয়েকজন তাঁবুতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন। গোলপোস্টের জাল ও টানেলের ছাউনি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ ভাঙা চেয়ার দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে, পরে র্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রশাসন ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক তারকাদের অনুষ্ঠান আয়োজনে নতুন নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণয়নের দাবি উঠেছে।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছেন। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি দলটির প্রাথমিক সদস্যপদ ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন। সাক্ষাৎকালে তিনি জামায়াতের নীতি, আদর্শ, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দলের অবস্থানের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আখতারুজ্জামান ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় এবং দেশের স্বার্থে বাকি জীবন উৎসর্গের অঙ্গীকার করেন। তিনি দলীয় শৃঙ্খলা ও আনুগত্য বজায় রাখার প্রতিশ্রুতিও দেন। আখতারুজ্জামান কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন এবং দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন। তিনি ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নূর মোহাম্মদের কাছে পরাজিত হন।
মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি হামলাকে কাপুরুষোচিত ও বর্বর বলে নিন্দা জানান এবং দোষারোপের রাজনীতি পরিহার করে সরকারকে সহযোগিতার মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত আনসারী বলেন, হাদি শুধু একজন ব্যক্তি নন, বরং সংগ্রামী ও সাহসী এক প্রজন্মের প্রতীক। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জাতির নৈতিক দায়িত্ব। তিনি সকল নাগরিককে হাদির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং এই সংকটময় সময়ে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। ঘটনাটি রাজনৈতিক সহনশীলতা ও আইনের শাসনের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ তদন্তই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে পারে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি শুক্রবার অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি লাইফ সাপোর্টে আছেন এবং চিকিৎসকেরা তাকে ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের জানান, ওসমান হাদির ‘ইন্টারনাল রেসপন্স’ আছে, তবে তিনি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন। মঞ্চ ২৪-এর আহ্বায়ক ফাহিম ফারুকী বলেন, হাদি বর্তমানে শ্বাস নিচ্ছেন এবং রক্ত গ্রহণ করছেন, যা ইতিবাচক লক্ষণ। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিজয়নগর কালভার্ট রোড এলাকায় প্রচারণার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখনো কোনো হামলাকারীকে শনাক্ত করা যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই হামলা নির্বাচনী সহিংসতার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনে বিদেশেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। হাদির বোন তাকে আজীবন দেশপ্রেমিক ও বিপ্লবী হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, তিনি পরিবারের মেরুদণ্ড এবং জুলাই বিপ্লবের একনিষ্ঠ কর্মী। ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার ও জুলাই বিপ্লবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান। তারা প্রশ্ন তোলেন, গুলিবর্ষণের সন্দেহভাজন ব্যক্তি কীভাবে জামিন পেয়েছিল তা তদন্ত করা উচিত। প্রধান উপদেষ্টা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয়ভাবে অপরাধীদের ধরতে কাজ করছে এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে আইন, পরিবেশ, শিল্প ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন, যা সরকারের স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি নির্দেশ করে।
আরো ফিড দেখতে লগইন করুন।